Astaghfirullah: ইস্থিগফার কি?
ইস্থিগফার হলো আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফ চাওয়ার প্রক্রিয়া। এটি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সাধারণত মুসলিমরা বলে থাকেন :
ক). আস্তাগফিরুল্লাহ – “আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।”
খ). আস্তাগফিরুল্লাহ রাব্বি ওয়া আতুবু ইলাইহি– “আমি আমার প্রতিপালক আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসি।”
ইস্থিগফার শুধু একটি দোয়া নয়, বরং আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক দৃঢ় করার বিশেষ মাধ্যম। এটি আল্লাহর দয়া, ক্ষমা ও রহমত লাভের দরজা খুলে দেয়।
ইস্থিগফারের উদ্দেশ্য (Astaghfirullah)
কুরআনে আল্লাহ বলেছেন :
“আমি তাকে (মানুষকে) পথ দেখাই– সে হয় কৃতজ্ঞ হবে, না হয় অকৃতজ্ঞ হবে।” (সূরা আল-ইনসান ৭৬:৩)
অতএব, মানুষ ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সৎকর্ম কিংবা পাপে লিপ্ত হতে পারে। পাপ হলে ইস্থিগফার করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো:
১। আল্লাহর কাছে বিনয় প্রকাশ করা।
২। অন্তরের গুনাহ ধুয়ে ফেলা।
৩। শয়তানের প্ররোচনার বিপরীতে শক্তি অর্জন।
৪। আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করা।
কুরআনে ইস্থিগফার
ইস্থিগফার ও এর মূল ধাতু গফর সম্পর্কিত শব্দ কুরআনে ৭০ বারেরও বেশি এসেছে। উদাহরণ :
ক) “তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, অতঃপর তাঁর দিকে তওবা করো।”
খ) “যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেলে অথবা নিজের উপর জুলুম করে, তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাদের গুনাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।”
এ থেকে বুঝা যায়, ইস্থিগফার শুধু নবী-রাসুলদের নয়, বরং মুসলমানদের জন্য জরুরি আমল।
নবী করিম (স) এর জীবন থেকে
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন :
“আল্লাহর শপথ! নিশ্চয় আমি প্রতিদিন সত্তর বারেরও বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তওবা করি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩০৭)
আরেক হাদিসে আছে :
“হে লোকেরা! আল্লাহর কাছে তওবা কর এবং ইস্থিগফার কর, আমি প্রতিদিন একশবার তওবা করি।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭০২)
জনপ্রিয় ইস্থিগফারের দোয়া ও অর্থ
১। আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লু জাম বিন আতূবু ইলাইহি
অর্থ : আমি আমার সব গুনাহের জন্য আমার প্রভু আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাঁর কাছেই ফিরে আসি। (তিরমিজি)
২। আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি
অর্থ : আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাঁর কাছেই ফিরে আসি। (বুখারিন)
৩। রাব্বিগফিরলী ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আনতা আত্-তাওয়্াবুর রাহীম
অর্থ : হে আমার প্রভু! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। (আবু দাউদ, তিরমিজি)
৪। আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাযী লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি
অর্থ : আমি সেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই; তিনি চিরঞ্জীব, সর্বশক্তিমান, এবং আমি তাঁর কাছেই ফিরে আসি। (আবু দাউদ, মিশকাত)
৫. আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; আমাকে ক্ষমা করুন। (তিরমিজি)
সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার (শ্রেষ্ঠ দোয়া)- Bangla

Astaghfirullah Bangla
আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি, লা ইলাহা ইল্লা আনতা, খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতা’তু। আউযু বিকা মিন শাররি মা সানা’তু। আবূউ লাকা বি নি’মাতিকা আলাইয়া, ওয়া আবূউ লাকা বি জান্বি। ফাগফিরলী, ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।
অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনিই আমার রব। আপনার ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আপনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার দাস। আমি সাধ্যানুযায়ী আপনার সঙ্গে অঙ্গীকারে অটল আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই। আপনার নেয়ামত স্বীকার করছি, আমার গুনাহ স্বীকার করছি। আমাকে ক্ষমা করুন। কেননা, আপনার ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩০৬)
ফজিলত: সকালে এ দোয়া পাঠ করলে সন্ধ্যার আগে মৃত্যু হলে জান্নাত, আর সন্ধ্যায় পাঠ করলে সকাল হওয়ার আগে মৃত্যু হলে জান্নাত ।
Read More: Surah Ayatul Kursi Bangla
ইস্থিগফারের ফজিলত
১। গুনাহ মাফ হয় – কুরআনে আল্লাহ বলেন : “আর যারা কোনো মন্দ কাজ করে, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তারা আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও দয়ালু হিসেবে পায়।” (সূরা আন-নিসা ৪: ১১০)
২। রিজিক বৃদ্ধি হয়- নূহ (আ.) তাঁর কওমকে বলেছিলেন :
“তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে ক্ষমা চাও। তিনি মেঘমালা থেকে বৃষ্টি ঝরাবেন, সম্পদ ও সন্তান দ্বারা সমৃদ্ধ করবেন।” ( সূরা নূহ ৭১: ১০-১২)
৩। হৃদয় প্রশান্ত হয় – ইস্থিগফার হৃদয়ের কালিমা দূর করে।
৪। জান্নাতের সুসংবাদ : সকাল-সন্ধ্যায় সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার পাঠ করলে মৃত্যু হলে জান্নাত।
৫। বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি – রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন :
“যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার করবে, আল্লাহ তাকে প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন, প্রতিটি সংকট থেকে রাস্তা বের করবেন এবং অপ্রত্যাশিত স্থান থেকে রিজিক দেবেন।” (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
1. ইস্থিগফার কি?
ইস্থিগফার হলো আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফ চাওয়ার প্রক্রিয়া।
2. ইস্তিগফার পড়ার উপকারিতা কী?
গুনাহ মাফ হয়, রিজিক বৃদ্ধি হয়, হৃদয় প্রশান্ত হয়, জান্নাতের সুসংবাদ, বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি হয়।
3. কোন দোয়াটি শ্রেষ্ঠ ইস্তিগফার?
“সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার”