পশ্চিম এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের একটি দেশ তুরস্ক।
ভৌগোলিক অবস্থান
তুরস্কের সরকারি নাম রিপাবলিক অফ তুর্কি।তুরস্কে প্রায় বেশির ভাগই এশীয় অংশে পর্বতময় আনাতোলিয়া বা এশিয়া মাইনর উপদ্বীপে পড়েছে। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা আনাতোলিয়া তে অবস্থিত। তুরস্কের বাকি অংশের নাম পূর্ব বা তুর্কিয় থ্রাস এবং এটি ইউরোপের দক্ষিণ–পূর্ব কোণে অবস্থিত। তুরস্ক মোটামুটি চতুর্ভুজাকৃতির পশ্চিমে এজিয়ো সাগর ও গ্রীস উত্তরপূর্বে জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, পূর্বে ইরান, দক্ষিণে ইরাক সিরিয়া ও ভূমধ্যসাগর অবস্থিত। তুরস্কে রয়েছে একটি বিস্তৃত উপকূল। রাষ্ট্রপতি: রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ট্রেন্ডিং
রাজধানী : আঙ্কারা
জনসংখ্যা: ৮২ মিলিয়ন (২০২১) ইউরোস্ট্যাট
মুদ্রা: তুর্কি লিরা
ইতিহাস ও সংস্কৃতি
ইউরোপ ও এশিয়ার সঙ্গমস্থলে অবস্থিত বলে তুরস্কের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে প্রভাব পড়ছে। তুরস্ক এশিয়া ও ইউরোপের মানুষের চলাচলের সেতু হিসেবে কাজ করেছে। এসব নানা বিচিত্র কাজের জন্য তুরস্কের একটি নিজস্ব পরিচয় সৃষ্টি হয়েছে। এই সমৃদ্ধ সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে এখানকার স্থাপত্য চারুকলার সংগীত ও সাহিত্য। গ্রামীণ অঞ্চলে এখনো অনেক অতীত ঐতিহ্য আছে বটে। প্রাচীনকাল থেকে বহু বিচিত্র জাতীয় সংস্কৃতির লোক এলাকা দখল করেছে। এখানে ফিজিও গ্রীক পারসিক ও রোমানদের আগমন ঘটে। মধ্য এশিয়ার যাযাবর তুর্কি জাতির লোকেরা 11 শতকে দেশটি দখল করে এবং সেখানে সেলজুক রাজবংশের পতন করে। তাদের শাসন এর মাধ্যমেই এ অঞ্চলের জনগণ তুর্কি ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে মিশে যায়। তেরোশো শতকে মোঙ্গলদের আক্রমণে সেলজুক রাজবংশের পতন ঘটে।তেরো শতকের শেষদিকে এখানে উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন হয়।এরা পরবর্তী 600 বছর তুরস্ক শাসন করে এবং আনাতুলিয়া ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্য পূর্ব ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকার একটি বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। ১৯২৩ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের তুর্কি ভাষী এলাকা আনাতোলিয়া ও পূর্ব থ্রাস নিয়ে আধুনিক তুরস্ক প্রজাতন্ত্র গঠিত হয় ।
নিচের বিষয়গুলো জানতে ঘুরে আসতে পারেন
►►আয়ারল্যান্ড দেশ – সকল তথ্য সমূহ
►►ফিজি দেশ
►►আজারবাইজান দেশ -সকল তথ্য সমূহ
জনসংখ্যা আয়তন ও ভাষা
৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ দেশটিতে প্রায় ৮ কোটি ২০ লাখ মানুষের বসবাস।আয়তনের দিক দিয়ে এটি বিশ্বের প্রায় 36 তম দেশ । তুর্কি ভাষা তুরস্কের সরকারি ভাষা। এখানকার প্রায় 90% লোক তুর্কি ভাষাতেই কথা বলে। এছাড়াও আরো এখানে ৩০ টি ভাষা প্রচলিত। তবে আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে ইংরেজি ব্যবহার করা হয়।
ধর্মীয় অবস্থা
বর্তমানে তুরস্ক একটি সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষ দেশ যার কোন নিজস্বরাষ্ট্র ধর্ম নেই এবং সংবিধানে প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তবে তুরস্কের 96 শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্ম অনুসারী,০.৩%খ্রিষ্টান, ৩.২%অন্যান্য ধর্ম অনুসারী।
অর্থনৈতিক অবস্থা
আঙ্কারা তুরস্কের রাজধানী ও দেশটির একটি বৃহত্তম শহর। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও শিল্প শহর। আঙ্কারা তে তুরস্ক সরকারের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সমস্ত বিদেশী দূতাবাস অবস্থিত। ইস্তানবুল তুরস্কের অন্যতম প্রধান একটি শহর। যা তুরস্কের অর্থনীতির কেন্দ্রস্থল। তুরস্কের সরকারি মুদ্রা তুরকিশ লিরা।
রাজনৈতিক অবস্থা
তুরস্কের রাজনীতি একটি বহুদলীয় সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোতে সংগঠিত হয়। সরকার প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের উপর। তুরস্কে 550 সদস্যের একটি সংসদ আছে। যার সদস্যরা 5 বছরের জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন।
শিক্ষাব্যবস্থা ও খেলাধুলা
দেশটিতে গড় শিক্ষা হার ৮৭.৪%। তুরস্কের জনপ্রিয় একটি খেলা ফুটবল। ফুটবলে তাদের সর্বোচ্চ সফলতা হচ্ছে ২০০২ সালের জাপান দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান অর্জন।
নিচের বিষয়গুলো জানতে ঘুরে আসতে পারেন
►চীন দেশ – সকল তথ্য সমূহ
►গ্রিস দেশ–সকল তথ্য সমূহ
পর্যটন শিল্প
ঘুরাঘুরির জন্য আদর্শ একটি স্থান তুরস্ক । তুরস্কে যেতে হলে ভিসা আগেই নিতে হবে। তবে আবেদনের পূর্বে দেখে নিতে হবে পাসপোর্ট এর মেয়াদ কতদিন আছে। অন্তত ছয় মাস পাসপোর্ট এর মেয়াদ থাকতে হবে না হলে ভিসার আবেদন অনুমোদন না হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
খাদ্য ব্যবস্থা
তুরস্কের মানুষ খুবই মিশুক । তাই কেউ যদি রাস্তায় তার বাড়িতে চা বা কফির আমন্ত্রণ দেয় তাহলে অবাক হবার কিছু নেই। বন্ধুত্বের অসৎ ব্যবহার হতে সাবধান। বহু শতাব্দী ধরে তুরস্ক ছিল একটি কৃষি প্রধান দেশ।