Welcome To (ERIN)
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলার ৫ম অধ্যায় প্রথম পরিচ্ছেদ সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলার ৫ম অধ্যায় প্রথম পরিচ্ছেদ : পাঠ্য বইয়ে একটি প্রায়োগিক লেখা বুঝানোর জন্য জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি দিয়েছেন। মূলত এই প্রায়োগিক লেখা বলতে বোঝানো হয়েছে বাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত রচনা। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিবেদন, চিঠিপত্র, দিনলিপি, বিজ্ঞাপন, বিজ্ঞপ্তি,প্রভৃতি বিষয় সমূহ।
মূল বইয়ে জাহানারা ইমাম রচিত ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনাটি প্রায়োগিক লেখা। কারণ বাস্তব জীবনের কিছু তুলে ধরেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের কিছু সংখ্যক ঘটনা লেখক দিন ও তারিখ উল্লেখের মাধ্যমে দিনলিপি তৈরি করেছেন।
৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় প্রথম পরিচ্ছেদ
৭ একাত্তরের দিনগুলি’ রচনায় লেখক যা বলেছেন, তা নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো। (বাংলা মূলবই পৃষ্ঠা : ৬৫)
উত্তর:
রুমি জাহানারা ইমামের বড় ছেলে। সে কিছু স্টিকার নিয়ে এসেছে সাথে করে। এগুলো মনে হচ্ছে একেকটা একেক জনের জীবন কাহিনী। বাংলা লেখার স্টিকার প্রথম দেখলাম এবং সে এগুলো গাড়িতে লাগিয়েছে। স্টিকারের ডিজাইন ও লিখেছেন কামরুল হাসান। তিনি নিজেকে পটুয়া বলে দাবি করেন। কয়েকদিন আগে পটুয়া সমাজ সমিতি নামে একটি সংস্থা খুলেছেন। গত শুক্রবার সমিতির সভা ছিল। এই সমিতি তে শাপলা ফুলকে সংগ্রামী বাংলার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তাব করেন।
২২ মার্চ ১৯৭১, সোমবার
ছুটির দিন তবুও গতকাল এক মূহুরতও বিশ্রাম নিতে পারিনি। কারণ সারাদিন মেহমান ছিল। তাদের কে নাশতা দিতে দিতে বারেক, সুবহান,কাশেম সবাই ক্লান্ত। আমিও ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু দেশ ব্যাপী এতো এতো ঘটনাবলির উত্তেজনায় সবার সাথে আমিও টের পায়নি। কিভাবে যে সময় চলে গেল।
রুমী, জামি নাস্তা খেয়ে আর বাসায় নেই। কোথায় যেন গেছে। আগামীকাল ২৩ শে মার্চ প্রতিরোধ দিবস ধরা হয়। এই জন্য জনগণের উত্তেজনা।
রাজনামচা লিখি- এখন তুমি তিন-চার দিনের ঘটনা রোজনামচা আকারে লিখে শিক্ষককে দেখাও। (ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলার মূলবই পৃষ্ঠা: ৬৫)
১০ জানুয়ারি , শুক্রবার। ঢাকা।
আজ আমার জন্মদিন দিন। আমার ছুটির দিন। অনেক বেলা করে ঘুম থেকে উঠেছি। উঠেই দেখি আজ, আম্মু অনেক রকমের রান্নার আয়োজন করছেন। আমাকে দেখে আম্মু ডাকলেন, আর বললেন প্রেশ হও। আমি আনন্দের সাথে উঠে ফ্রেশ হতে গেলাম। আম্মুর কাছে শুনলাম সন্ধ্যায় ছোটো মামা ও বড় আপু আসবেন। আহা! আমার কী যে আনন্দ লাগতেছে । অনেক রাত পর্যন্ত খালতোবোন আর ভাগিনার সাথে মজা করব।
১১ জানুয়ারি , শনিবার। ঢাকা।
আজও সরকারি বন্ধ স্কুলে যেতে হবে না । খালামণি ও বড় আপা গতকাল বিকেলে এসেছেন। সারা রাত আমরা আড্ডা দিয়েছি। আজ আম্মু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেছেন। কিছু দিন আগে আম্মু এক্সিডেন্ট হয়েছিল। দুপুরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। ডাক্তার বলেছেন ।
আম্মুর জন্য আমার ভালো লাগতেছে না সুন্দর মূহুর্তে অসুস্থ হয়ে গেছেন। আব্বু অনেক ব্যস্ত মানুষ কাজে থাকেন । আমার ডাক্তার, খেলার সাথী, পড়ার শিক্ষক মা । আম্মু যদি অসুস্থ থাকে আমার পুরো পৃথিবী অন্ধকার লাগে। সবাই আমাকে নিয়ে বাইরে যেতে চাইছেন। আমার যেতে মন চাচ্ছে না। সব কিছু মন মরা লাগতেছে।
১২ জানুয়ারি,রবিবার। ঢাকা।
আজ আম্মু কালকের থেকে সুস্থ। আর আজ আমি সব মিলিয়ে স্কুলেও যাইনি। রিতা আমার বান্ধবী তার কাছ থেকে স্কুলের খবর নিয়েছি। আজ আমরা সবাই মিলে চড়ুইভাতি খেলব ভাবলাম আম্মুকেও বলেছি। আমি, রিংকি, খালামণি আর আপা খুব মজা করেছি।
অধিকন্তুু অনুশীলনের জন্য একক ও দলগত কাজের সমাধান
কাজ-১: পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ওপর একটি রোজনামচা লেখো।
উত্তর:
১৪ এপ্রিল, ২০২৪ বিকেল ৫ টা শুক্রবার। এবছর বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে এসেছি দাদু বাড়িতে। আমরা পড়াশোনা আর বাবার চাকরির সুবাদে থাকি শহরে। দাদু বাড়িও শহরে কিন্তু অন্য শহরে, ছোটো শহর বলা যায়। এখানে এসেছেন আপা, আব্বা, আম্মা, ভাই- বোন, সবাই। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে এই শহরে একটা নিয়ম পহেলা বৈশাখে বাজি ফুরাই রাতে। সকালে উঠে দেখি কেমন পুড়া পুড়া গন্ধ। তবে বাতাসটা ছিল খুব ভালো লাগার মতো। সবুজ প্রকৃতি সাথে বাতাস আহ! কি ভালো লাগছে । তারপর পুকুরে গিয়ে একটু সাতার দিয়ে গোসল করে নতুন পোশাক পরে বেরিয়ে পড়লাম।
এখানে একটি স্কুলের সামনে বড় রেন্টি গাছের নিচে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। স্কুলটি আমার পরিচিত আমি প্রথম এখানে ভর্তি হবো ভেবেছিলাম। এই মাঠে বিরাট পহেলা বৈশাখ মেলার আয়োজন। এক পাশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কিছু রাইড। আমার ছোট বোন আগে থেকেই বলছে সে দোলনায় উঠবে এগুলো দেখে মনে হলো। একপাশে দাড়িয়ে নবীনদের সম্মিলিত কণ্ঠে, কখনো একক কণ্ঠে গান শুনে ভালো লাগল। সাথে বাচ্চাদের চমৎকার নৃত্য।
নানান ধরনের গান গাইতেছে বাউল,ভাটিয়ালি,ক্লাসিকাল,দেশাত্মবোধক, লোকসংগীত ইত্যাদি। এর মাঝেই দাদা বলতেছে চলো যাই একজায়গায় ওখানে ঘোড়া দৌড় হবে। গেলাম দেখলাম কত সুন্দর করে সাজিয়েছে ঘোড়া গুলো।
ঘোড়া দৌড় শুরু হবে আমি একপাশে জায়গা পেয়ে বসলাম। শুরু হলো প্রথম একটি কালো ঘোড়া অনেক স্পিডে যাচ্ছে। আরেকটি লাল ঘোড়াও কালোটার কাছাকাছি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। আলোচকরা খুব চমৎকার বললেন। এটি দেখে অনেক কিছু বিষয় জানলাম। খাবারের দেওয়া হলো, খেয়ে নিলাম। তারপর সবাই মিলে চললাম মেলাতে সেই স্কুলের মাঠে।
মানুষের আনাগোনা অনেক, অনেক রকমের দোকান , নানা রকম আওয়াজ। অনুষ্ঠানের এর মধ্যে অনেক ঘুরলাম। ছোট বোনকে নাগর দোলাতে দোল খাওয়ালাম। তারপর কিছু খেলনা কিনলাম ভাইয়ের জন্য বেশ ভালো লাগলো সব অবিজ্ঞতা। সন্ধ্যা হলো দাদু বাড়িতে যেতে। তারপর চলে এলাম নিজের বাসায় গোপালগঞ্জ।
কাজ-৩: শিক্ষাসফর নিয়ে এক দিনের রোজনামচা লেখো।
উত্তর:
৩১ জুন, ২০২৩
শিক্ষাসফরের আজ দ্বিতীয় দিন এখন ভোর ৬ টা। প্রত্যেক বছর আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষাসফরের আয়োজন করে থাকে জ্ঞান আরোহনের লক্ষ্যে। আমাদের বার্ষিক পরীক্ষার পর পর আয়োজন টা করা হয়। সব মিলিয়ে আমরা আসলাম চল্লিশ জন শিক্ষার্থীর একটি দল গতকাল এসেছি নেত্রকোনার দুর্গাপুরে । গত বছর একদল গিয়েছিল বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থান চট্টগ্রামের কক্সবাজার।
আজ সকালে নাস্তা করে দূর্ঘাপুরের পাহাড়ি অঞ্চলগুলো ঘুরে দেখলাম। পাহাড় গুলো অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশও অপরুপ । আমরা সবাই এখানকার ছবি তুলেছি। এরপর আমরা গেলাম বিরিশিরি দেখতে। বিরিশিরির সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করেছে। সেখানে রয়েছে অনেক শিড়ি যা দিয়ে একে একে আমরা মজা করে উপরে উঠি।
এখানে পাহাড় ও প্রাকৃতিক সম্পর্কে জ্ঞান আরোহন করলাম। কিছু ছবি তুললাম অদ্ভুত দৃশ্যের। ভাবলাম এখান থেকে গিয়ে একটি ম্যাগাজিন তৈরি করবো। আমাদের সুশৃঙ্খল ঘোরাফেরা দেখে শিক্ষকরাও খুব খুশি। আমরা জানালাম ম্যাগাজিনের কথা। নানান বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখে শিক্ষকরাও আনন্দিত। কিছু নিজে দেখে শেখার আনন্দ আমরা উপলব্ধি করলাম। বাংলাদেশের এসব সৌন্দর্য ইতিহাস-ঐতিহ্য আমাদের মনের সীমানাকে আরও প্রসার করবে।
কিছু তথ্য কয়েকজন মিলে পেশ করলো শিক্ষকদের কাছে। উনারাও অনেক খুশি হয়েছেন।
আব্দুল্লাহপুর , ঢাকা।
কাজ-৪ : রোজনামচা রচনা লিখার ক্ষেত্রে ৩টি করণীয় উল্লেখযোগ্য বসন্ত উৎসব এবং বিজয় দিবসে প্রভাতফেরিত অংশ গ্রহণের অনুভূতি নিয়ে ২ দিনের রোজনামচা লেখো।
উত্তর: রোজনামচার ৭ লেখার জন্য তিনটি করণীয় নিচে উল্লেখ্য করা হলো-
১. সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এমন বা দৈনন্দিন ঘটনাকে কেন্দ্র করে লিখতে হবে।
২. রোজনামচা ৭ লেখার সময় তারিখ, বার ও সময় অবশ্যই লিখতে হবে।
৩. মূলবিষয়টি সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করতে হবে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার
আজ আমাদের স্কুলে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা
হয়েছিল। স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা আজ কেউ শাড়ি বা কেউ জামা পড়ে এসেছিল। ওই দিন স্কুলের পোশাকের বদলে রঙিন পোশাক পরে এসেছিল সবাই । সকাল বেলা স্কুলে গেলাম কত আয়োজন শুরু হলো। আজ ক্লাস হবে তার পরিবর্তে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরু হয় ‘ একটি দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে । তারপর একেরপর এক ক্লাসের শিক্ষার্থীরা এসে একটি করে গান শোনায় । সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়,একটানা ২ ঘন্টা হতে পারে।
১২ টায় অনুষ্টান শেষে আমরা যার যার ক্লাসে চলে আসি। বসন্ত উৎসবের জন্য আমাদের তিনটি ক্লাস হয়েছে। ক্লাস শেষে অডিটোরিয়ামে কাজীনজরুলের নাটকের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। টিফিনের সময়ের পর ২ টা থেকে চুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রত্যেক ক্লাসের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছিল। বিকেল পাচঁটার সময় ‘বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠান শেষ হয়। তারপর আমি আমার আম্মার সাথে বাড়ি পিরি খুব ভালো লাগলো আজ।
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, বুধবার আজ বিজয় দিবস, বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। এই দিন দেশের বিজয় লাভ করেছিল। দিনটি তে স্মৃতিসৌধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানায় রাত ১২ টার পর। সকালবেলা,যদি রাত ফহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই গান বাজাচ্ছে। আমি এমনিও ভোরে উঠি চোখ খুলে দেখি ভোর প্রায় পাঁচটা। প্রভাতফেরিতে যাবো বলে পোশাক পরে তৈরি হয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে বের হলাম। বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখলাম সবাই প্রভাতফেরির ফুল হাতে সারিবদ্ধ হয়ে দাড়ালো।
লাইনে দাঁড়িয়ে আছি একটু পরেই সবাই রওনা দিল মুক্তিযুদ্ধ ভবনে। সেখানে ফুল দিবেন। তখন স্মৃতিসৌধকে মনে হলো হাজার হাজার মানুষের
প্রাণের কেন্দ্রস্থল। মনে হলো একি এক শ্রদ্ধা নিবেদন। যেন ভেসে উঠল একাত্তরের স্বাধীনতার পর মহা সম্মেলনের ছবি। অসীম শ্রদ্ধায় স্মরণ হচ্ছে ভাষা আন্দোলনে আত্মদানে সালাম,বরকত, রফিক প্রমুখ শহিদের কথা। প্রচন্ড । হাতের ফুলগুলো ভাষাশহিদদের উদ্দেশ্যে অর্পণ করে এলাম। ভালো থাকুক দেশের জন্য আত্মত্যাগী মানুষ গুলো।
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলার