গ্রিসের ভৌগোলিক অবস্থান গ্রিস হচ্ছে ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অংশের একটি রাষ্ট্র বলকান প্রদীপের একেবারে দক্ষিণে অবস্থিত। এর সীমান্তবর্তী রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে উত্তরে বুলগেরিয়া, প্রাক্তন যুগ স্লাভিয়া প্রজাতন্ত্রী, মেসিডোনিয়া এবং আলবেনিয়া এবং পূর্বে তুরস্ক। গ্রীসের মরুভূমির পূর্বে এবং দক্ষিনে এজিয়ান সাগর অবস্থিত রয়েছে এবং পশ্চিমে রয়েছে আইওনিয়ান সাগর৷ভূমধ্যসাগরের উভয় অংশে গ্রিসের অনেকগুলো দ্বীপ রয়েছে। গ্রীস ইউরোপ এশিয়া এবং আফ্রিকার মিলন স্থানে অবস্থিত। গ্রিসের মোট আয়তন 1 লক্ষ ৩১ হাজার 990 বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা১ কোটি সাত লক্ষ বিশ হাজার।
রাজধানী : অ্যাথেন্স
জনসংখ্যা: 10.72 মিলিয়ন (2019) ইউরোস্ট্যাট
রাষ্ট্রপতি: কাতেরিনা সাকেল্লারাপোলো
মুদ্রা: ইউরো
গ্রিস ইতিহাস ▼
বর্তমানে গ্রিকদের পূর্বপুরুষ একসময়ের পৃথিবী বিজয়ী গ্রিক সভ্যতা বাইজানটাইন সম্রাজ্য এবং প্রায় চার শতাব্দীর অটোমান সাম্রাজ্য। এই দেশ পশ্চিমা বিশ্বের জ্ঞান–বিজ্ঞান বিস্তারে খ্যাত এবং গণতন্ত্রের জন্মদায়ক হিসেবে সুপরিচিত। ইংলিশের আরো কিছু বৃহৎ অবদান হল পশ্চিমা দর্শন, অলিম্পিক গেম, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং নাটক।গ্রীস ১৫০০শতাব্দীর দিকে অটোমান শাসনের অধীনে চলে আসে ও ১৮৩০এর দিকে গ্রিসের জনগণ অটোমান শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং এই যুদ্ধের পর গ্রীস একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। গ্রিসের রাজধানীর নাম অ্যাথেন্স। গ্রিসের অফিসিয়াল ভাষা গ্রিক ও অফিসিয়াল নাম হ্যালেনিক রিপাবলিক যা গ্রিক ভাষায় বলা হয় হেলাস বা এ্যালারা। এ দেশের মুদ্রার পূর্ব নাম ছিল ড্রাকমা যা পরে ২০০২ সালে ইউরো তে রুপান্তর হয়। গ্রিসে ২০০০ আইল্যান্ড রয়েছে। যার মধ্যে ১৭০ টি তে মানুষ বাস করে।
গ্রিস সভ্যতা ও ঐতিহ্য ▼
প্রাচীন গ্রিক এমন একটি সভ্যতা যারা নিজেদের ঐতিহ্য এবং চাকচিক্যপূর্ণ অবস্থার জন্য আজও বিখ্যাত। প্রাচীন গ্রিসের অনেক তথ্য অবাক করার মত। প্রাচীন গ্রীস পৃথিবীর প্রথম লোকতন্ত্র ছিল। যা প্রায় ১৮৫সাল পর্যন্ত গেছিল। প্রাচীন গ্রিসের মানুষের জীবন ব্যবস্থা ওই সময়ের সবচেয়ে উন্নত বলে মনে করা হতো কিন্তু একটি ব্যাপার খুবই আশ্চর্যজনক ছিল যে ওই সময় এরে সাম্রাজ্যের রাজধানী এথেন্সে বসবাসকারী লোকেদের মধ্যে 40 শতাংশেরও বেশি মানুষ দাস দাসী হিসেবে জীবনযাপন কাটাতো।আর এদের অবস্থা এতই শোচনীয় ছিল যে লবণের বিনিময় ও তাদের বিক্রি করা হতো।
তখনকার সময়ে যাদের কোনো রাজনৈতিক জ্ঞান ছিল না তাদের গ্রিসের ভাষায় মোরগ বলা হত। প্রাচীন গ্রিসে মানুষের ওপর আপেল ছুড়ে মারার অর্থ কে বোঝানো হতো তাকে খুব ভালোবাসে।শোনা যায় ওই সময়ে পুরো পৃথিবীর মানুষেরা গোসলের ব্যাপারে খুব একটা সচেতন ছিল না তবে গ্রিসের মানুষেরা প্রতিদিন গোসল করতে খুবই ভালবাসতো।স্পার্টন কে গ্রিক সাম্রাজ্যের সবচেয়ে মহান যোদ্ধা মনে করা হতো। স্পার্টন হল একটি বাহিনীর নাম।এ বাহিনীতে থাকা যোদ্ধারা ছিল অনেক শক্তিশালী। এ যোদ্ধারা ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের পরিবারের সাথে দেখা করতে পারত না অর্থাৎ যতদিন তারা সৈনিক দলত্যাগ না করতো ততদিন তারা পরিবারের সাথে দেখা করা নিষিদ্ধ ছিল। ওই সময়ে মহিলাদের জোড়া ভুরু কে সৌন্দর্যের প্রতীক মানা হতো।
গ্রিস সাম্রাজ্যের খাদ্যাভাস ▼
প্রাচীন গ্রিসের লোকেরা সিম খেতো না। তারা মনে করত সিমের মধ্যে মৃত ব্যক্তির আত্মা বসবাস করে।
নিচের বিষয়গুলো জানতে ঘুরে আসতে পারেন
আয়ারল্যান্ড দেশ – সকল তথ্য সমূহ
খেলাধুলা ▼
অলিম্পিকের শুরু হয়েছিল গ্রীসেই।আর গ্রিসে অলিম্পিক চলাকালীন সবরকম যুদ্ধ বন্ধ করে দেওয়া হতো।
শিক্ষাব্যবস্থা ▼
গণিতের বিষয়ে প্রাচীন গ্রিকদের অনেক অবদান রয়েছে। যা আজ ও পুরো বিশ্বকে তাক লাগায়।পিথাগোরাস, ইউক্লিড, প্লেটো, আলেকজেন্ডার, আর্কিমিডিসের মত মহান গণিতবিদদের জন্ম হয়েছিল গ্রিসে।ইংরেজি ভাষার অনেক শব্দটি গ্রিক ভাষা থেকে এসেছে।
ধর্মীয় ব্যবস্থা ▽
দেশটির শতকরা প্রায় ৯৩% মানুষ খ্রিস্টান ধর্মে বিশ্বাসী ও কোন ধর্মে বিশ্বাসী নয় এমন মানুষের সংখ্যা 4 শতাংশ। ইসলাম বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা 2 শতাংশ।
অর্থনীতি ▼
গ্রীসের অর্থনীতি অনেকটাই পর্যটন নির্ভর। দেশটির মাথাপিছু আয় প্রায় 21 হাজার মার্কিন ডলার।