আনন্দের নৌ-ভ্রমণ

আনন্দের নৌ-ভ্রমণ

কোথায় গেলে পাবেন আনন্দের নৌ-ভ্রমণ । জেনে নিন আনন্দের নৌ-ভ্রমণ এর কথা। সিদ্ধান্ত হয় দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরে নৌ-ভ্রমণে যাব। তাদের সিদ্ধান্ত মতে- শরতের ছায়াঘেরা দুপুরে; বৈদ্যেরবাজার খেয়াঘাট থেকে ১২শ টাকায় নৌকা ভাড়া করে মাঝির সাথে কথা পাকাপাকি হয় নিজ গন্তব্যে গোধূলিবেলা ফিরব। এতে মাঝিও রাজি।

আনন্দের নৌ-ভ্রমণ

সোনারগাঁ থেকে পার্শ্ববর্তী মেঘনা থানার কোনো এক সুনসান গ্রামে মেঘনা নদীর বুকচিরে ছলাৎ ছলাৎ ঢেউয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম- সোনারগাঁ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার আলামিন তুষার, সাংবাদিক কবির হোসেন, মো. পারভেজ, মাজারুল ইসলাম, মো. আমির হোসেন, হুমায়ন কবির ও নাট্য অভিনেতা আল-আমিন সেলিম।

নৌ-ভ্রমণে যে যাই বলুক না কেন সবার খাবার-দাবার একই রকম হয়। সেই কারণে আল-আমিন সেলিম বলেন, খাবার হিসেবে থাকবে- শুকনো খাবার চানাচুর, চীনাবাদাম, লটকন, কাঁঠাল, কলা এবং কোমল পানীয়। এছাড়া সঙ্গে থাকবে মিনি সাবান ও মাস্ক। তার কথামতো ওইসব খাবার কেনা হয়।

আমাদের গন্তব্য স্থানে গিয়ে দেখি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। প্রকৃতিটাও মনভোলানো সোনালি অতীতের মতো সুজলা-সুফলা, শ্যামল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মনও কেড়েছে। আমাদের ছাড়া আরও প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার দেখে মুগ্ধ হচ্ছে; আমরাও ওই দলে অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমির আরেক নাম গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ কিংবা নদীপথ। প্রতিদিনই এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বলে মেঘনা নদীতে ঘুরতে আসেন অসংখ্য দেশি এবং বিদেশি পর্যটক; তারা ঐতিহ্যপ্রেমে পড়ে মুগ্ধ হন। সোনাগাঁয়ের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় নুনেরটেক, প্রাচীন নগর থেকেও বিস্তৃত এ দ্বীপটি। তার বিশালতায় অনেকের মন ভরে…।

আমরা যখন ফিরব জেলেরা তখন মেঘনা নদীর মাঝখানে রুপালি ইলিশ ধরছে। মাছ দর-দাম না মিললেও জেলেদের হাসি যেন সারা দিনের ক্লান্তি দূর হয়েছে। এর মাঝে তাদের সুখ-দুঃখ, ভালোবাসার কথা এরই ফাঁকে শুনেছি। তখন মনে পড়ে, ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসের নায়িকা কপিলার উক্তি ‘আমারে নিবা মাঝি লগে…?’

যেদিন মাছ পায় সেই দিন কোনোরকমে সংসার চলে। তাদের মলিন মুখ অমলিন হয়। যেদিন মাছ না পায় সেদিন ধার- দেনায় পেট চলে। ভ্রমণে গিয়ে তা উপলব্ধি করতে পেরেছি। এটাও শুনেছি আমাদের এলাকায় জেলেদের জন্য সরকারিভাবে কোনো সুবিধা নেই।


আরো পড়ুন: ভাস্কো দা গামার পর্তুগালে
আরো পড়ুন: বিদেশ ভ্রমণ : প্রস্তুতি হবে কেমন?
আরো পড়ুন: পর্তুগালের শহর ব্রাগা : ইউরোপে সেরা গন্তব্য


বাংলাদেশের অন্যতম মেঘনা নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিশালতা যেমন মনোরম বলে দূরের ও কাছের পর্যটকদের হাতছানি দেয়, তা সহসাই বোঝা যায়। যদিও করোনাকাল তারপরও প্রতিদিনই অসংখ্য পর্যটকের আগমনে ভরে ওঠে ঝিক-ঝিক বালুকাময় অঘোষিত পর্যেটন কেন্দ্র নিঝুম দ্বীপে।

প্রাচীনকালে মা-মাটির ঐতিহ্যপ্রেমে পড়ে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছিলেন প্রিয় মাতৃভূমি সোনারগাঁয়ে পর্যেটক ইবনে বতুতা, মাহুয়েন, ফেইসিন, রালফ-ফিশ, পর্তুগিজ বণিক ডুয়ার্তো বারবোসা, ভেনিসের বণিক সিজার ফ্রেডালিকদের মন কেড়ে নিয়েছিল। করোনাকালে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য তাসের ঘরের মতো থমকে আছে ওইসব দর্শনীয় স্থান তথা প্রাকৃতিক মনভোলানো সৌন্দর্য।

আমাদের YouTube চ্যানেলটি ভিজিট করে আসতে পারেন এই লিংক থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *