বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ হচ্ছে বাংলাদেশে

বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ হচ্ছে বাংলাদেশে

বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ হচ্ছে বাংলাদেশে । আসুন এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করে জানা যাক। ৫০ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে শুরু হয়ে এ সড়কটি শেষ হবে কক্সবাজারের টেকনাফে। এ সড়কই হবে পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ। এটি বাংলাদেশকে যুক্ত করবে এশিয়ান হাইওয়ের সাথে। এ সড়ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা তৈরির কাজ চলছে।

বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ হচ্ছে বাংলাদেশে

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে এভাবে এক সুতায় গাঁথতে কর্ণফুলী নদীর নিচে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকায় তৈরি হচ্ছে টানেল। ২ হাজার ৪২৬ কোটি টাকায় নির্মিত হয়েছে রিং রোড। ১৮ হাজার কোটি টাকায় চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে বসছে নতুন রেললাইন। এ মেরিন ড্রাইভ হলে পর্যটন খাতে তৈরি হবে নতুন সম্ভাবনা। খুলবে অর্থনীতির নতুন দুয়ারও।

৩ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ ডজনের বেশি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে মহেশখালীতে। এ মেরিন ড্রাইভ মহেশখালীকে বিশেষ সুবিধা দেবে। ১১ হাজার কোটি টাকায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে হচ্ছে দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ অঞ্চলে পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ সড়ক। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে হওয়া অপর অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্যও নতুন সুযোগ নিয়ে আসবে।

এ মেরিন ড্রাইভ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দূরত্ব কমাবে প্রায় ৫০ কিলোমিটার। এখন সড়কপথে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যেতে সময় লাগে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। কিন্তু মেরিন ড্রাইভ নির্মিত হলে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় যাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব সড়কপথে ১৬০ কিলোমিটার।

আর চট্টগ্রাম থেকে মিরসরাই পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৭০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ শুরু হয়েছে। তবে কক্সবাজার থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক আগেই নির্মাণ করা হয়েছে।

এ মেরিন ড্রাইভ বাংলাদেশকে এশিয়ান হাইওয়ের সাথে যুক্ত করবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ প্রসারে এশিয়ান হাইওয়েতে পর্যায়ক্রমে যুক্ত হবে দেশের আটটি মহাসড়কের ৬০০ কিলোমিটার সড়ক। এটি ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথেও বাংলাদেশকে যুক্ত করবে। সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনের (সাসেক) এশিয়ান হাইওয়ে এবং বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমারের (বিসিআইএম) মধ্যে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডরে নতুন করে এ আট মহাসড়ক যুক্ত হচ্ছে।

২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে এনইসি নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হয়। এর ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় সড়ক যাতায়াত নিরাপদ করতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

এশিয়ান হাইওয়ের জন্য যশোরের শার্শা ও ঝিকরগাছা, নড়াইল জেলার সদর ও লোহাগড়া, গোপালগঞ্জের সদর ও কাশিয়ানী, চট্টগ্রামের মিরসরাই, ফটিকছড়ি, পটিয়া ও চন্দনাইশ এবং কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলাকে বাস্তবায়ন এলাকা ধরে নেওয়া হয়েছে।

তবে এশিয়ান হাইওয়ের মূল সংযোগটি যাবে চট্টগ্রাম দিয়ে। তামাবিল দিয়েও একটি পথ যুক্ত হবে। ২০০৯ সালের ১০ আগস্ট এশিয়ান হাইওয়ের মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় ও আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনে ‘দ্য ইন্টার গভর্নমেন্টাল এগ্রিমেন্ট অন দ্য এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কে’ পক্ষভুক্ত হয় বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শনে এসে সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ যুক্ত হবে এশিয়ান হাইওয়ের সাথে। এ মহাপরিকল্পনাকে এক সুতাই আনতে কর্ণফুলী নদীতে তৈরি করা হচ্ছে টানেল।



মেরিন ড্রাইভের এ জন্য নতুন করে প্রকল্পও নেয়া হচ্ছে। টানেলের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। রিং রোড প্রকল্পও শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পটিকে এখন মিরসরাই পর্যন্ত টেনে নিতে চাই আমরা।

কক্সবাজার থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ আগেই নির্মাণ করা হয়েছে। এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারকে সংযুক্ত করার কাজ চলছে। অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান সম্ভ্যাব্যতা যাচাই করে এ বছরের মধ্যে একটি প্রাথমিক নকশা দেবে বলে জানান মন্ত্রী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তৈরি করা ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রিং রোডও অন্তর্ভুক্ত আছে এর মধ্যে। এটি চট্টগ্রাম শহর থেকে মিরসরাই পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে।

আমাদের YouTube চ্যানেলটি ভিজিট করে আসতে পারেন এই লিংক থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *